নিঃশ্বাস নিতে দিন চুল-ত্বক-নখকে, তবেই হবেন বাইরে থেকে চকচকে ও ভেতর থেকে তরতাজা
কেয়া শেঠ
লকডাউনের সমস্যা যতই হোক, প্রকৃতি যে একটু হলেও শান্তি পেয়েছে, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। প্রকৃতির ভাল থাকা কিন্তু আমাদেরও ভাল থাকা! নিজেকে সুন্দর ও সুস্থ রাখার জন্য প্রকৃতিকে উপভোগ করা খুব জরুরি।
পুজো আসছে, মেক আপ করতেই হবে অল্পবিস্তর। তাই এই ক’দিন একদম মেকআপ না-ছোঁয়া থাকুক আপনার ত্বক। ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন বারবার। নিয়ম মেনে ত্বক পরিষ্কার করুন, নারিশ করুন। নিঃশ্বাস নিক আপনার ত্বক। চুলেও তাই। কেমিক্যাল ছোঁয়াবেন না। খলা হাওয়ায় শ্বাস নিক চুল। চুল-ত্বকের মতো নখও নিঃশ্বাস নেয়, জানতেন? নেলপলিশ তুলে ফেলুন একদম। খালি থাকুক নখ। আর যাঁরা এক্সটেনশন করিয়েছেন, তাঁরাও কৃত্রিম নখ খুলে রাখুন। নখকে নারিশ করুন ভাল করে।
কনুই, হাঁটুতে কালো ছোপ পড়েছে না? রোজ লেবু ঘষে নিতে পারেন একটু করে। দাঁতই বা বাদ থাকবে কেন? নুন-তেল দিয়ে সময় নিয়ে মেজে দেখুন তো, কেমন ঝকঝক করে!
আরও একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, প্রকৃতির গুণে বাইরে থেকে যতই জেল্লা বাড়াই, শরীরের ভেতরের ফিটনেসও কিন্তু জরুরি। তাই খোলা হাওয়ায় সকালে আর সন্ধেয় আধ ঘণ্টা করে ফ্রি হ্যান্ড কররুন পুজোর আগে কটা দিন। যোগব্যায়ামও ভারী উপকারী। ছাদ বা বারান্দাতেই করা যায় এই অভ্যেস। একান্তই সম্ভব না হলে, অন্তত নিয়ম করে একটু সময় খোলা হাওয়ায় হাঁটা যায়। এতে শুধু ব্যায়াম নয়, খোলা হাওয়াটাও নেওয়া হবে।
এই পুরো চর্চাটাই কিন্তু পুজোর আগে রুটিন করে করতে পারলে খুব ভাল। এমন হতেই পারে, সকালে আধ ঘণ্টা আমি শরীর চর্চা করে, পরের আধঘণ্টা ত্বকের চর্চা করলাম। শুধু শরীরচর্চাই বা কেন। এই সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোও জরুরি। কিছুই নয়, রোজ মধু খাওয়া যায় নিয়ম করে। সেইসঙ্গে প্রতিবার চায়ের সঙ্গে আদা থেঁতো করে মেশালেও ফ্রেশ লাগবে শরীর। আমলকি বাড়িতে পড়ে থাকে প্রায়ই, শুকনো আমলকিও জলে ভিজিয়ে সেটা ফুটিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
অবাঞ্ছিত লোম আমাদের শরীরের নানা জায়গায় অস্বস্তির কারণ হয়। অতিরিক্ত লোমের কারণে আমাদের নিয়মিত পার্লারে গিয়ে ওয়্যাক্সিং করতে হয় অনেককেই। সেটা এখন সম্ভব হচ্ছে না, কিন্তু এরও ঘরোয়া এবং সহজ উপায় আছে।
২০০ গ্রাম চিনি, একটা লেবু, দু’চামচ গ্লিসারিন একসঙ্গে ফোটাতে হবে। নাড়তে হবে সমানে। এটা ততটাই ঘন হবে, যতটা ঘন হলে হাতের দু’আঙুলে এটা নিয়ে আঙুল দুটো ছাড়ালে সুতোর মতো চিটচিটে হয়ে লেগে থাকবে। এটা বানিয়ে রেখে দেওয়া যাবে ঠান্ডা করে। সময় মতো হাল্কা গরম করে, ওয়্যাক্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। মাখন কাটার ছুরি দিয়ে হাতে-পায়ে লাগিয়ে, পরিচ্ছন্ন কোনও মোটা কাপড়, জিন্সের টুকরো ব্যবহার করে ওয়্যাক্স করা যাবে। ওয়্যাক্সটা লাগাতে হবে লোমের গ্রোথের দিকে, আর কাপড় দিয়ে তুলতে হবে উল্টোদিকে।
এটা মুখের লোমের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে আমি বলব অভ্যাস না থাকলে বা দক্ষতা না থাকলে এটা না করাই ভাল। কারণ মুখের চামড়া অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়, একটু এদিক-ওদিক হলে সমস্যা হতে পারে। তাই এভাবে মুখের ওয়্যাক্স করার অভ্যাস না থাকলে না করাই ভাল। পিউবিক এরিয়ার জন্যও একই কথা প্রযোজ্য। খুব দক্ষ হাত না হলে ঘরে সংবেদনীল জায়গায় লোম তোলার চেষ্টা না করলেই ভাল।
সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতা ঘিরে থাক আপনাকে,সময়টাকে ইতিবাচক ভাবে কাজে লাগান। ভাল থাকুন পুজোয়, সে ভাল থাকা সব দিক থেকেই জরুরি।