‘মারির দেশে ত্রাণের বেশে’ পরিযায়ী শ্রমিক মাকেই পুজো করছে বড়িশা ক্লাব
বড়িশা ক্লাব। যাদের হাত ধরে কলকাতায় থিম পুজোর সূচনা, এবার তাদের থিম: ‘ত্রাণ’। শিল্পী রিন্টু দাসের ভাবনায় এবারের পুজোয় এক অভিনব পুজো উপহার দিতে চলেছে তাঁরা। থিমের পাশাপাশি, নিজেদের এবারের পুজোর জন্য একটি স্লোগান স্থির করেছে বড়িশা ক্লাব। ‘মারির দেশে ত্রাণের বেশে, অন্নপূর্ণার ভেলায় ভেসে’।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের জেরেই শুরু হয়েছিল লকডাউন। আর সেই লকডাউনের ভয়াবহতায় দেশ কত কি না প্রত্যক্ষ করেছে। নিরন্ন মানুষের হাহাকার ! লাখো লাখো পরিযায়ী শ্রমিকের পথ চলা ! আরও কত কী ? সেই সমস্ত ভাবনা নিয়েই তৈরি হয়েছে বড়িশা ক্লাবের থিম-ত্রাণ।মহামারীর সময়ে বেঁচে থাকাই যেখানে দায়, সেখানে মানুষ প্রতি সেকেন্ডের লড়াই উঠে এসেছে বড়িশা ক্লাবের মণ্ডপে। নিজের থিম প্রসঙ্গে শিল্পীর কথায়, “মা এখানে ত্রাণদাত্রী। আবার ত্রাণ গ্রহীতাও। এখানে অন্নপূর্ণা যাবেন অন্নের সন্ধানে। দুর্যোগে যাতে পরস্পরের পাশে আমরা দাঁড়াতে পারি এই পুজো সেই বার্তাই দেবে।”
শিল্পী রিন্টু দাসের ভাবনায় অভিনব মূর্তি দেখা যাবে বড়িশা ক্লাবের পুজোয়। সন্তান সন্ততি নিয়ে পরিযায়ী মা অন্নের সন্ধানে বেরিয়েছেন। এই কৃষ্ণনগরের শিল্পী পল্লব ভৌমিক বড়িশা ক্লাবের দেবীমূর্তি গড়েছেন। ফাইবারে তৈরি এই মূর্তি সবদিক থেকেই নজর টানবেই বলে দাবি উদ্যোক্তাদের।বড়িশা ক্লাব বরাবরই বড় বাজেটের পুজো করে এসেছে। করোনা, লকডাউন ও আমফান ঘুর্ণিঝড়ের দুর্যোগের কারণে বড়িশা ক্লাবের কর্মকর্তারা ত্রাণ বন্টনে বিশেষ নজর দিয়েছিলেন। বড়িশা ক্লাবের সভাপতি সুদীপ পোল্লে এলাকার কাউন্সিলরও বটে। স্বাভাবিকভাবেই এই কঠিন সময়ে তাঁর প্রাথমিক কাজ ছিল এলাকার মানুষকে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া। সেই সময়ই শিল্পী রিন্টু দাস তাঁর কাছে পুজোর বাজেট প্রসঙ্গে জানতে চান। জবাবে সুদীপবাবু বলেন এই মুহূর্তে আমার কাছে কেবল ত্রাণের বস্তা রয়েছে। আপনি সেইসব দিয়ে প্যান্ডেল করতে পারলে করুন। পুজো কমিটির সভাপতির এই কথাটিকে নিজের ভাবনায় কাজে লাগান শিল্পী রিন্টু। এভাবেই প্রাণ পেয়েছে বড়িশা ক্লাবের থিম-ত্রাণ। পুজোর বাজেট ৭০ শতাংশ কমিয়েও ঐতিহ্য ও ঘরানাই দুইই বজায় রাখতে পেরেছে দক্ষিণ কলকাতার এই অন্যতম পুজো কমিটি।