অষ্টমীতে ফ্যাশন-ঝড় তুলতে বিকল্প নেই ট্র্যাডিশনাল শাড়ি-সাজের
পুজোর বাকি দিনগুলোর যাই সাজ হোক না কেন অষ্টমীতে সাবেক সাজ মাস্ট। সকালে শাড়ি পরে অঞ্জলি দেওয়া, অন্তত এক মাস আগে থেকে সেই সাজের প্রস্তুতি নেওয়া– এই সবের মধ্যেই রয়েছে এক আলাদা উন্মাদনা। এবার অবশ্য এতটা আড়ম্বর হওয়ার সম্ভাবনা কম। করোনা আতঙ্কে খানিক ভাটা পড়েছে সকলের উৎসাহেই। বারোয়ারি পুজোগুলো হবে নিয়মরক্ষার্থে। যাদের বাড়ির পুজো রয়েছে তাদের অবশ্য একটু সুবিধা।
তবে করোনা থাকলেও সাজতে তো বাধা নেই। খালি বাইরে বেশি না বেরোলেই ভাল। তাই এবছর সেজেগুজে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেওয়া কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সুযোগ পেলে মাস্ক-স্যানিটাইজারের বেড়াজালে থেকে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স মেনটেন করে অঞ্জলিও দিয়ে ফেলাই যায়। তবে আর যাই হোক না কেন সাজগোজ কিন্তু মাস্ট। নিজে সাজুগুজু করার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধু-আত্মীয় বা প্রিয়জনের সাজটাও এক ফাঁকে দেখে নিতে হবে। আর সাজগোজের সুযোগ যখন রয়েছে তখন আপনার অষ্টমী লুক যেন হয় সকলের থেকে আলাদা, সেদিকে নজর তো দিতেই হবে।
পরনে থাকুক ট্র্যাডিশনাল শাড়ি
অষ্টমীর অঞ্জলি দেওয়ার জন্য বা সকালে পরার ক্ষেত্রে হাল্কা ঢাকাই-জামদানি, হ্যান্ডলুম, এক রঙা থান, কেরলের কটন, আপনার পছন্দের তালিকায় থাকুক এই সব শাড়ি। চাইলে কেউ গরদের শাড়িও পরতে পারেন। লাল-সাদা ছাড়া অন্য রঙয়ের গরদও আজকাল পাওয়া যায়। সকালের শাড়ির ক্ষেত্রে হাল্কা রঙ পছন্দ করুন। সাদা, আকাশি, গোলাপি বা যে কোনও রঙয়ের ফিকে শেড এবার ফ্যাশনে ইন।
রাতের পোশাকে একটা তসর কিংবা ঘিচা হলে জমে যাবে অষ্টমীর সাজ। বেজ কালারের তসর আর উজ্জ্বল রঙের পাড় সবসময়ই ফ্যাশনে ইন। এছাড়াও ডাই করা বা প্রিন্টেড তসর বা ঘিচাও আরামদায়ক শাড়ি। দেখতে ক্লাসি আর হাল্কা একটা তসর এই পুজোয় আপনার কালেকশনে থাকা চাই ই চাই। তসরের ক্ষেত্রে টেম্পল পার কিংবা জরি বর্ডারও ট্রাই করা যেতে পারে।
ওয়ার্ড্রোবে এবার থাকুক ভিন-রাজ্যের শাড়ি
শাড়ির সমঝদাররা বলে থাকেন ওড়িশার শাড়ি সবচেয়ে সুন্দর। ইক্কত হোক বা কটকি কিংবা সম্বলপুরি—-সিল্কের ক্ষেত্রে এই তিনের জুড়ি মেলা ভার। তবে আজকাল সমানে সমানে পাল্লা দিচ্ছে দক্ষিণের কাঞ্জিভরম। স্লিক পার আর হাল্কা জরিতে বোনা স্মার্ট লুকের কাঞ্জিভরম জেন ওয়াইয়েরও পছন্দের। এছাড়াও রয়েছে মধুবনী প্রিন্ট বা পেন্টের শাড়ি। তসরের ওপর হাতে আঁকা মধুবনী কাজের শাড়ি রীতিমতো লোভনীয়। সিল্কের শাড়ি যদি রাতে পরেন তাহলে অবশ্যই রঙ বেছে নিন গাঢ়। আর যদি হাল্কা রঙয়ের শাড়ি পরেন তাহলে গয়না এবং মেকআপ সামান্য ভারী হলে ক্ষতি নেই। তবে লাউড যেন না হয়। বাংলার নিজস্ব শাড়ি ছাড়া এবার পুজোয় অষ্টমী স্পেশ্যালে ভিন রাজ্যের একটা শিল্প বেছে নিতেই পারেন আপনি।
তসরের শাড়ি কালেকশনে অন্তত একটা রাখুনই। কারণ এই শাড়ির সুতো যত পুরনো হবে শাড়ির গুণগত মান তত ভাল হবে। সেটা ঘিচা হোক বা তসর, সবক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এছাড়াও পরতে পারেন লিনেন, খাদি কটন কিংবা হ্যান্ডলুমের শাড়ি। যাঁরা হাল্কা জমির শাড়ি পছন্দ করেন তাঁদের জন্য এই ধরনের শাড়িই বেস্ট।
নিপুণ কাঁথাকাজ সবসময় অনন্য
ব্যাঙ্গালোর সিল্ক হোক বা তসর, কালেকশনে একটা কাঁথা থাকলে আর চিন্তা নেই। সারা বছর বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও পরতে পারবেন এই শাড়ি। পদ্ম-কাঁথা, নানা রঙয়ের পাখি কাজ কিংবা শান্তিনিকেতনি কাঁথা এখন বাজারে হট ফেভারিট। সূক্ষ্ম কাজের একটা কাঁথা স্টিচের শাড়ি অনেক গল্প বলে দেয়। শিল্পীর ধৈর্য, নিপুণতা, মোটিভ ওয়ার্ক সব মিলিয়ে অনন্য হয়ে ওঠে এই শাড়ি।
এছাড়াও যাঁরা স্টিচ ওয়ার্কের শাড়ি পছন্দ করেন তাঁরা গুজরাতি, কচ্ছি, কাথিয়াবারি, পার্শি ওয়ার্ক– এই সব শাড়িও কিনতে পারেন।
তবে যাই শাড়ি পড়ুন আর যেমনই সাজুন খেয়াল রাখবেন আপনি যাতে তাতে কমফোর্টেবল থাকেন। কারণ সাজ যখন আপনার কাছে বোঝা হয়ে যাবে তখন সেটা সঠিক ভাবে ক্যারি করা মুশকিলের।