উৎসবে নিজেকে সাজিয়ে তোলার জন্যে বয়স কোনও বাধাই নয়, বলছেন বিখ্যাত মেকআপ শিল্পী
উৎসবে-পার্বণে নিজেদের সুন্দর করে তুলতে কে না চান! কিন্তু বয়স ৫০ ছাড়ালেই কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা যায়। কী সাজবেন, কেমন মেকআপ করবেন এই নিয়ে অনেকগুলো প্রশ্ন উঁকি দিতে থাকে মনের মধ্যে! পুজোর আগে এই সব প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে স্যান্ডি লিন্টারের কাছে। ৭৩ বছরের প্রখ্যাত মেকআপ শিল্পী হলেন স্যান্ডি। তাঁর কথায়, “সৌন্দর্য কোনও বয়সেরই সীমারেখায় আটকে নেই।”
১৯৪৭ সালে স্টেটন দ্বীপে তাঁর জন্ম। কেরিয়ার শুরু করেন নিয়ইউর্য়কের বিখ্যাত হেয়ারড্রেসার মিঃ কেনেথ ব্যাটেলের সহকারী হিসেবে। সেই সময় স্যান্ডির ক্লায়েন্ট ছিলেন জ্যাকি ওনাসিস এবং বারবারা ওয়াল্টারস।
৭০-এর দশকে তিনি নিজেই হাইপ্রোফাইল এডিটরিয়ালের কাজ শুরু করেন। বিখ্যাত ফটোগ্রাফার ইরভিং পেন, হেলমুট নিউটন এবং আর্থার এলগার্টের সঙ্গে তিনি কাজ করেন। ‘হার্ড ওয়ার্ক, হার্ড প্লে’ মানসিকতাকে সঙ্গে নিয়ে স্যান্ডি তাঁর যাত্রা শুরু করেন। তাঁর কঠিন পরিশ্রমেরই ফলশ্রুতি হল ‘স্টুডিও ৫৪’।
৮০-র দশকে তিনি ভোগের সাথে কাজ করতে শুরু করেন। ভোগের সুপার মডেল ইমান, সিন্ডি ক্রফোর্ড এবং পট্টি হ্যানসেনের মুখের মেকআপ স্যান্ডি করেন। এর পর আর তাঁকে পিছনে ফিরে দেখতে হয়নি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাঁর কাজের দক্ষতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। স্যান্ডি ক্রিটিসি ব্রিনকলে, এলিজাবেথ হারলি, ডেবি হ্যারি এবং রিতা উইলসন সহ বহু বিখ্যাত মানুষের সঙ্গে কাজ করেন।
স্যান্ডি তাঁর নিজের সম্পর্কে বলেন, “আমার মনে পড়ে তরুণ স্যান্ডি মেকআপ শিল্পীকে, তার পর মধ্যবয়স্ক স্যান্ডি মেকআপ শিল্পীকে এবং এখন ভবিষ্যতের স্যান্ডি মেকআপ শিল্পী হিসেবে কেমন হবে তাই নিয়েই ভাবি।” স্যান্ডি মনে করেন, যে কোনও বয়সেই মহিলারা মেকআপ করতে পারেন। বয়সটা কোনও কিছুর জন্যেই বাধা নয়। চোখ থেকে ঠোঁট– সব কিছু সুন্দর করে তোলার জন্যে, এইসময়ের সবচেয়ে বিখ্যাত গাইড হলেন স্যান্ডি লিন্টার।
আপনিও জেনে নিন, তিনি কী বলছেন।
ত্বকের গ্লো বা লাবণ্য সবসময় ঠিক রাখার জন্যে কিছু কৌশল তো পালন করতেই হয়। ত্বকের যত্নের জন্যে ত্বককে রুটিন অনুযায়ী পরিষ্কার করা, ময়শ্চারাইজ করা দরকার। মেকআপ করার আগে মুখে হালকা ময়শ্চারাইজ করে নেওয়া প্রয়োজন। ভারী ময়শ্চারাইজ মেকআপের সঙ্গে মানানসই হয় না। স্কিনটোনের ওপর মেকআপের উপাদানও নির্ভর করে।
“বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মুখে বলিরেখা দেখা দেবেই,সেগুলো জোর করে ঢাকার চেষ্টা করবেন না। এতে তা আরও বেশি করে নজরে আসবে।”– বলেন স্যান্ডি লিন্টার। তিনি হাইড্রেটিং ফাউন্ডেশন ব্যবহারের পরামর্শ দেন। উদাহরণ হিসেবে কেভিন অউকোইন দ্য ইথেরিয়ালিস্টের ফর্মুলার কথা বলেন। পিগমেন্ট অঞ্চলগুলোর জন্যে তিনি ‘জর্জিও আরমানি হাই প্রিসিয়ন রিটাচ কনসিলার’ ব্যবহারের কথা বলেন।
ফাউন্ডেশন বা কনসিলার ব্যবহার করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে তা আপনার স্কিন কালারের সাথে মানানসই হয়। লিন্টার বলেন, “মুখের ওপর ফাউন্ডেশন ব্রাশ করার পরে হালকা করে গলায় ব্রাশ করতে হবে।তার পর ব্রোঞ্জার গালে দিতে হবে। ৫০-এর ওপর বয়স সকলের ওপরেই আমি ব্রোঞ্জার ব্যবহার করি কারণ এটা প্রাকৃতিক ভাবেই ত্বকের জন্যে ভাল। এছাড়াও গালের হাড়ের ওপরের চামড়াকেও এই ব্রোঞ্জার টানটান করে।”
গালে ব্লাশ করার ক্ষেত্রে তিনি গোলাপি ব্লাশকেই পছন্দ করেন। লিন্টার তাঁর ক্লায়েন্টদের ওপর ৯০-এর দশক থেকে এই প্রোডাক্ট ব্যবহার করছেন।
চোখ হল সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় মেকআপের ক্ষেত্রে। চোখের কাজল থেকে পাতা, আইশ্যাডো, আইল্যাশ, মাস্কারা কত কী রয়েছে! কিন্তু আপনি কী ব্যবহার করবেন? স্যান্ডি লিন্টার বলেন, আগে প্রচলিত ছিল, ৫০-এর ওপরের মহিলারা ব্রাউন লাইনার ব্যবহার করবেন। কিন্তু এটা ঠিক নয়। ৫০-এর ওপরের মহিলারাও আরামসে কালো লাইনার থেকে আইশ্যাডো ব্যবহার করতে পারেন। বরং শুধু ব্রাউনেই তাঁদের চোখ ক্লান্ত দেখায়।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার ঠোঁটের কমনীয়তা কমে আসতেই পারে। ঠোঁটে লিপস্টিক লাগানোর আগে পেন্সিল দিয়ে ঠোঁট এঁকে নেওয়ার পরামর্শ দেন লিন্টার। লিন্টার ঠোঁটে ম্যাট কালারের লিপস্টিক ব্যবহারের কথা বলেন।