নিরামিষ স্ন্যাক্সেও জমবে পুজো, ট্রাই করেই দেখুন না ‘পোট্যাটো গার্লিক রিং’
পুজোর ভূরিভোজের তালিকা মোটামুটি বানিয়েই ফেলেছে অজন্তা-রণিত। সদ্যবিবাহিত কাপেল, নতুন ফ্ল্যাটে উঠেছে কয়েক মাস। এবার যেহেতু বাইরে ঘোরাঘুরি তেমন হবে না, তাই বেশির ভাগ দিন আড্ডা জমছে বাড়িতেই। এই সুযোগে একসঙ্গে অনেকের সঙ্গে দেখা করা, পাত পেড়ে খাওয়ানো—সবই মিটে যাচ্ছে। ওরা দিব্যি গুছিয়ে নিয়েছে দিন ধরে ধরে। সপ্তমীর সকালটা আত্মীয়দের সঙ্গে, তো অষ্টমীর বিকেলে আসছে অফিস কলিগরা। আবার কলেজের পুরনো বন্ধুদের জন্য ধরা আছে নবমীর রাত।
খাওয়াদাওয়ার লিস্টিংও হয়ে গেছে। বেশিরভাগ রান্নাই হবে বাড়িতে। ওরা দুজনেই দিব্যি রাঁধতে পারে, আধুনিক চটপটে ছেলে-মেয়েরা যেমন হয় আর কী। সমস্যা হয়েছে, নিরামিষ স্ন্যাক্স নিয়ে। সন্ধের জলখাবারে বা রাতের আড্ডায় মুখ চালাতে টুকটাক ভাজাভুজি মাস্ট। আর সেটা বলতে চিকেন পকোড়া বা ফিসফিঙ্গার টাইপের আইটেমই জমে ভাল। নিরামিষ বড় জোর পনিরের আইটেম। তাই বা রোজ কত ভাল লাগে। ওরা চাইছিল, একদম হাল্কা উপকরণে তৈরি নতুন ধরনের কোনও নিরামিষ স্ন্যাক্স। যা খেয়ে পেট তো ভরবেই, মনেও খামতি থাকবে না। খুশি হবেন নিরামিষাসীরাও।
অনেক ভেবে, ইউটিউব ঘেঁটে এক আশ্চর্য মজার আইটেম তৈরি করবে বলে ঠিক করল অজন্তা-রণিত। পোট্যাটো গার্লিক রিং। এর প্রিপারেশন আগে থেকে করে রাখা যাবে, অতিথিরা এলে শুধু গরং গরম ভেজে দিলেই হবে। আবার চাইলে আগে থেকে মুচমুচিয়ে ভেজে কৌটোবন্দিও করে রাখা যায় চিপসের মতো।
এই স্ন্যাক্স বানাতে লাগবে চারটে বড় আলু সেদ্ধ করা, এক কাপ সুজি, চার চামচ কর্নফ্লাওয়ার, ৬-৮ কোয়া রসুন ও এক আঁটি ধনেপাতা খুব মিহি করে কুচি করা, চিলি ফ্লেক্স দুচামচ, নুন স্বাদ মতো, ভাজার জন্য পর্যাপ্ত সাদা তেল।
প্রথমে মিক্সার গ্রাইন্ডারে সুজিটা দিয়ে মিহি করে গুঁড়িয়ে নিতে হবে। জল ছাড়াই শুকনো গুঁড়ো। চটকে পেস্ট করে নিতে হবে সেদ্ধ করে রাখা আলু। এর পরে একটা প্যানে দুচামচ মতো মাখন গরম করতে হবে। তাতে দিতে হবে রসুন কুচি ও চিলিফ্লেক্স। সুন্দর গন্ধ বেরোলে হাফ কাপ জল ঢেলে দিতে হবে। বেশি নয় কিন্তু। জলটা প্যানে ফুটে উঠলে, সেই ফুটন্ত জলে আস্তে করে ঢেলে দিতে হবে গুঁড়িয়ে নেওয়া সুজি। এমন ভাবে ঢালতে ঢালতে নাড়তে হবে, যাতে কোনও ভাবেই সুজি দলা পাকিয়ে না যায়।
সুজির বেশ মণ্ড তৈরি হয়ে গেলে, তা তুলে ঠান্ডা করে নিয়ে, আলুর সঙ্গে মিশিয়ে মেখে নিতে হবে নুন দিয়ে। মাখাটা টাইট করার জন্য মেশাতে হবে চার চামচ কর্নফ্লাওয়ার। সেই সঙ্গে দিয়ে দিতে হবে ধনেপাতা কুচিও। বেশ সুন্দর একটা ডো তৈরি হবে ময়দা মাখার মতো। সেটাকে মসৃণ জায়গায় রেখে বেলে নিতে হবে পাতলা করে। খুব বেশি পাতলা হবে না, তাহলে রিং ভেঙে যাবে।
এবার সেই বেলে নেওয়া ডো-এর উপর বড় গ্লাস বসিয়ে গোল করে, তার ভিতরে ছোট গ্লাস বসিয়ে আর একটা গোল করতে হবে। ফলে রিংয়ের মতো আকার হবে। এরকম করে গোটা মণ্ড থেকে রিং বানিয়ে নিয়ে, সেগুলি ছাঁকা তেলে ভেজে নিলেই তৈরি পোট্যাটো গার্লিক রিং। কেউ ভাজার আগে রিংগুলি বানিয়ে সংরক্ষণও করতে পারেন ফ্রিজে। ফ্রিজ থেকে বের করে ভাজলেই হল। আবার কেউ ভাজার পরেও কৌটোবন্দি করে রাখতে পারেন। সদ্য বানিয়ে গরম ভেজে খাওয়া তো সবচেয়ে ভাল বিকল্প।
অজন্তা-রণিত তো নিরামিষাসী অতিথিদের মন জয় করে ফেলার প্ল্যান পাকা করে ফেলল। আপনারাও ভেবে দেখতে পারেন, পুজোর আড্ডার স্ন্যাক্সে এই পদ রাখা যায় কিনা।