নোয়াখালির আম-ইলিশ রেঁধে সবাইকে চমকে দিন পুজোয়
মধুরিমা বসু
পূর্ববাংলার খাবারের স্বাদ নিয়ে তো কোনও কথাই হবে না। কখনও খুব ঝাল, কখনও বা মিষ্টি মিষ্টি। সে যেমনই হোক, খাওয়ার পর মুখে স্বাদ লেগে থাকে বহুক্ষণ। পূর্ববাংলার নোয়াখালির মানুষরা একটু তেলঝালমশলা দিয়ে রাঁধতে পছন্দ করেন। আর পদ্মার ইলিশ মাছ যেহেতু বিখ্যাত, তাই এই মাছ দিয়েই তারা নানারকম পদের রান্না করেন। এতসব পদের কথা হয়ত এপার বাংলার মানুষরা জানেনই না।
আমি বাঙাল বাড়ির মেয়ে। বাড়িতে মাংসের চেয়ে মাছ খাওয়ার চল বেশি। স্বভাবতই ইলিশ মাছ সবাই ভীষণ পছন্দ করেন। আমিও করি। বাড়িতে সাধারণত সর্ষে দিয়ে ইলিশের ভাপা বা পাতলা ঝোলই রান্না করা হয়। বাবার সেটাই পছন্দ। যদিও মা নানারকম নতুন নতুন পদের রান্না করেন এবং খেতে ভালবাসেন।
এই বছর পুজোটা পারতপক্ষে বাড়িতে বসেই কাটবে। পুজোর কটাদিন একরকম খাবার না খেয়ে একটু অন্যধারার সহজ পদ নিজের হেঁসেলেই তৈরি করতে পারেন। আম ইলিশের নাম শুনেছেন? না জেনে থাকলে আজ জেনে নিন কীভাবে এই আম ইলিশ রাঁধতে হয়। এখন বাজারে বেশ ভালো কোয়ালিটির ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। দামটাও আহামরি খুব বেশি নয়। এই রান্নায় রসুন ব্যবহার করা হয়, আবার আমের রসও ব্যবহার করব। কিন্তু ইলিশের স্বাদ একরকম থাকবে। এবার চটপট রেঁধে ফেলুন। আর নোয়াখালির স্বাদ ফিরিয়ে দিন বাড়ির সকলের মুখে।
রান্নার জন্য কী কী লাগবে
চারটে বড় বড় ইলিশ মাছের পিস, কালো জিরে এক চা চামচ, ২টো মাঝারি মাপের টম্যাটো কুচিকুচি করে কেটে রাখতে হবে, দু’কোয়া রসুন ছোট ছোট করে কেটে রাখুন, হলুদ এক চা চামচ, কাশ্মীরি লাল লঙ্কার গুঁড়ো এক চা চামচ, চিনি এক চা চামচ, নুন স্বাদ মতো, সর্ষের তেল অর্ধেক কাপ, দু-তিনটে কাঁচা লঙ্কা, একটা টক মিষ্টি আম ছোট ছোট মাপে কেটে রাখতে হবে, অল্প জল।
কেমন করে রাঁধবেন আম ইলিশ
প্রথমেই ইলিশের টুকরোগুলোতে হলুদ, নুন মাখিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। এর পর একটা কড়াই বা প্যানে অর্ধেক কাপ সর্ষের দিন। তেলটা গরম হয়ে গেলে তাতে মাছগুলো ভেজে নিন। ভাজা মাছ তুলে সরিয়ে রাখুন।
ওই তেলেই এবার কালো জিরে দিন। তার পরে তাতে রসুন কুচিগুলো দিয়ে একটু নেড়ে নেবেন। হালকা গোল্ডেন কালার হলেই গ্যাস কমিয়ে দেবেন। লক্ষ্য করবেন যেন পুড়ে না যায়। এবার তাতে টম্যাটো কুচি আর লঙ্কা দিয়ে হালকা আঁচে খানিকক্ষণ নাড়বেন।
টম্যাটোগুলো নরম হয়ে গেলেই তাতে লঙ্কার গুঁড়ো, হলুদ, স্বাদমতো নুন, চিনি দিন। ২ থেকে ৩ মিনিট এটাকে খুব ভালো করে রান্না করতে হবে। এবার এতে অল্প জল আর আমের কুচিগুলো দিয়ে, আরও একটু নেড়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখতে হবে।
এর পর মাছগুলো এতে ছেড়ে দিন। খুন্তি দিয়ে আলতো করে খুব ভাল করে নাড়বেন, যাতে মাছের মধ্যে মশলাটা ঢুকতে পারে। মাছ যেন ভেঙে না যায়। এর পর আবার ২ থেকে ৩ মিনিট ঢেকে রাখুন।
এবার রান্না রেডি। গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।