উৎসবের দিনগুলোয় জমিয়ে পেটপুজো ঘরে বসেই! দেখুন তো কোনটা থাকছে আপনার মেনুতে
বাঙালির কাছে পুজো মানেই আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে দিনরাত আড্ডা দেওয়া, হৈ হুল্লোড়ে মেতে ওঠা, বিকেলবেলায় গানের লড়াই, আর সকাল বিকেল জমিয়ে পেটপুজো। খাদ্যরসিক বাঙালিরা বলেন পুজোর আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যায় নানা রকম খাবারের স্বাদে।
কলকাতায় দুর্গাপুজো কাটালে বোঝা যায় পুজোর আনন্দে খাবারটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খাবারের উপর কোনও বাধা, নিষেধ থাকে না, নিরামিষ থেকে আমিষ, মিষ্টি থেকে টকঝাল, সাধারণ থেকে এক্সোটিক, ঘরোয়া থেকে ফিউশন রান্নার প্রায় হাজারের বেশি পদ থাকে উৎসব জুড়ে। যারা নানা রকম খাবারের স্বাদ নেওয়ার জন্য দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ান, তাদের অন্তত একবার পুজোর সময় কলকাতায় আসা উচিত বলেই মনে করেন খাদ্যরসিকরা।
এবারের পুজোয় নিয়ম কানুনের বড্ড কড়াকড়ি। মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরা না হলেও, রেস্তোরাঁয় খেতে যেতে কিন্তু মানা নেই। আবার এই খাবারের পদগুলো বাড়িতেই তৈরি করতে পারেন। জেনে নিন এই বিশেষ বাঙালি খাবারগুলোর নাম, যা ছাড়া উৎসব প্রায় বৃথা।
১. খিচুড়ি: অষ্টমীর ভোগ খিচুড়ি ছাড়া অসম্পূর্ণ। বাঙালির যে কোনও পুজোর অনুষ্ঠানে খিচুড়ি ভোগ থাকেই। বানানোও খুব সহজ। পাড়ার কর্তৃপক্ষ যদি এবার পুজোর খাওয়া দাওয়া বাতিল করে তাহলে বাড়িতেই অষ্টমীর দিন নিজে নিজে বানিয়ে ফেলুন খিচুড়ি।
২. সর্ষে ইলিশ: কথায় আছে মাছে ভাতে বাঙালি। খেতে বসলে পাতে একপিস মাছ থাকবে না, এটা হয়ই না। পুজোর কটা দিন আর নিয়ম মেনে চলতে হবে না। পাতলা ঝোলের বদলে সরষে দিয়ে জমিয়ে ইলিশ রাঁধুন। বাজারে এখন পাওয়াও যাচ্ছে ভাল কোয়ালিটির ইলিশ। ফলে পুজোয় একটা দিন ইলিশ খাওয়া থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন না।
৩. আলুপোস্ত: ধরুন পুজোর সময় বাড়িতে কোন অবাঙালি বন্ধু এসেছে যিনি নিরামিষ খেতে পছন্দ করেন। তাকে সবার আগে যে খাবার রেঁধে খাওয়ানো উচিত সেটা হল আলু পোস্ত। বাসমতি চালের ভাত, সোনা মুগ ডাল সঙ্গে আলু পোস্ত। নিরামিষ খাবারের স্বাদও মুখে লেগে থাকবে।
৪. ঘুগনি: সন্ধের জমজমাটি গানের লড়াই চলার সময় পরিবারের প্রত্যেক সদস্যদের জন্য স্ন্যাকস হিসেবে ঘুগনি পারফেক্ট। এর উপরে কুচিকুচি করে কাটা পেঁয়াজের টুকরো ছড়িয়ে দিতে পারলে তো আর কোনও কথাই থাকবে না।
৫. চিংড়ি পোস্ত: ওদিকে সরdষে ইলিশের নাম নেওয়ার পর যদি চিংড়ির নাম না করা হয় তাহলে ঘটিরা আবার খুব রেগে যাবে। চিংড়ি পোস্ত এমনই এক পদ ঘটি বাঙাল সকলেই পছন্দ করবেন। মালাইকারির মতো মিষ্টি না। অন্য স্বাদের এই রান্না পুজোর একটা দিন করতেই পারেন।
৬. সন্দেশ: মিষ্টি ছাড়া পুজো হয়! রসের মিষ্টি ছাড়া যারা একটু শুকনো মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এই সন্দেশ। কলকাতার সব মিষ্টির দোকানে সন্দেশের প্রচুর ভ্যারাইটি থাকে, যে কোনও একটা দুটো বেছে নেওয়াই খুব মুশকিল।
৭. লুচি: উৎসবের দিনে ব্রেকফাস্টে লুচি, আলুর দম থাকবে না এটা কখনও হয়! আটা না, ময়দার তৈরি লুচি নরম হয় বেশি। আলুর তরকারির সঙ্গে বেশি মানানসই। পরপর পাঁচ দিন না হোক, অন্তত দু-একদিন সকালে তো অবশ্যই খাবেন।
৮. মোচার চপ: যতই মোচার নাম করুক, চপের মূল উপাদান কিন্ত আসলে লুকিয়ে আলু আর মোচায় মাখা মশলায়। বিকেলবেলার আড্ডায় চায়ের সঙ্গে মোচার চপ থাকলে একেবারে জমে যাবে পুজো।
৯. কষা মাংস: নবমীর দুপুরে কবজি ডুবিয়ে মটন কষা খায় না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তেল, মশলা, খুব ঝাল দিয়ে তৈরি হয় এই রান্না। এবার পুজোতেও কিন্তু খেতে ভুলবেন না।
১০. রসগোল্লা: কলকাতার রসগোল্লা সারা পৃথিবী বিখ্যাত। দেশ বিদেশ থেকে কলকাতায় এলে সবার আগে রসগোল্লার স্বাদ নেয় সকলে। পুজোর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাঙালির পাতে মিষ্টি থাকবেই। আর রসগোল্লা ছাড়া বিজয়া তো ভাবাই যায় না।