হ্যাংআউটের পরে হোলনাইট আড্ডা, মুখ চালান ঘরে বানানো চিকেন পপকর্ন দিয়ে
সারা রাত এত কী আড্ডা! এই প্রশ্নের উত্তর কী করে বোঝাবে আহেলী মাকে! আগের বছর পর্যন্ত তো কলেজের বন্ধুরা মিলে সারা রাত প্যান্ডেল দাপিয়ে ঠাকুর দেখেছে। এবার সে সবে জল ঢেলেছে করোনা। বাবার কড়া নির্দেশ, সন্ধেবেলায় ঘুরেফিরে বাড়ি চলে আসবে। সারা রাত ঘুরে বেড়ানোর প্রশ্নই নেই! অগত্যা রাতের প্যান্ডেল-আড্ডা এবার বাড়িতেই। এই দিনটার জন্যই তো তাকিয়ে থাকা! এই কয়েকটা দিন, এতটা সময় বন্ধুরা সবাই মিলে হাসি, ঠাট্টা, গল্প, গানের সুযোগ। ডিনারের পরে গোল করে ড্রয়িংয়ে বসেই প্যান্ডেলের ফিল নেবে ওরা। তবে টুকটাক খাওয়া ছাড়া কি আড্ডা জমে? বাইরের খাবার চলবে না। মায়ের ওপর চাপ দেওয়াও অসম্ভব!
তাতে কী, আহেলী একাই একশো। ঠিক করেছে, সবাইকে চমকে দিয়ে বানিয়ে ফেলবে চিকেন পপকর্ন। আড্ডায় মুখ চালাতে এর জুড়ি নেই। স্বাদে তো অনন্য বটেই, আর এর মুচমুচে ব্যাপারটা এতই ম্যাজিক্যাল, যে কিছু বলার নেই। না, রান্নায় তেমন দড় নয় আহেলী। কিন্তু তাতে কী! ইউটিউব হ্যায় না! শুধু ফাইনাল নাইটের আগে একদিন রিহার্সাল দিতে হবে। ব্যস, সেই রাতে বাজিমাত করবে আহেলী। সেই মতো রিহার্সাল দিয়ে ফেলল সে। বাড়ির সবাইকে চমকে দিল চিকেন পপকর্ন খাইয়ে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কী কী দিয়ে, কেমন করে চিকেন পপকর্ন বানাল আহেলী!
চিকেন পপকর্ন বানাতে লাগবে, ছোট ছোট টুকরো করে কাটা বোনলেস চিকেন কিউব এক কেজি, গোলমরিচগুঁড়ো এক চামচ, লঙ্কাগুঁড়ো হাফ চামচ, এক চিমটি বেকিং পাউডার, এক চামচ সয়া সস, এক চামচ আদা-রসুনবাটা, স্বাদমতো অল্প নুন।
এর পরে, গোলমরিচগুঁড়ো, লঙ্কাগুঁড়ো, বেকিং পাউডার, সয়া সস, আদা-রসুনবাটা, নুন দিয়ে চিকেনের কিউবগুলো ভাল করে ম্যারিনেট করে রাখতে হবে। অন্তত আধঘণ্টা রাখতে পারলে ভাল।
এই সময়টায় একটা পাত্রে খানিকটা ময়দা নিন, তাতে সামান্য নুন ও গোলমরিচগুঁড়ো মিশিয়ে নিন। আর একটা পাত্রে দুটো ডিম ভাল করে ফেটিয়ে রাখুন। নুন দেবেন খুব সামান্য। আরও একটা পাত্রে রাখুন ব্রেডক্রাম্ব। ব্রেডক্রাম্ব দোকানে কিনতে পাওয়া যায়, নইলে যে টোস্ট বিস্কিটের প্যাকেট পাওয়া যায় তা মিক্সারে গুঁড়িয়ে নিলেও হবে।
এর পরে ম্যারিনেটেড মাংসের টুকরোগুলো একটা একটা করে তুলে কোট করতে হবে প্রথমে ময়দায়, তার পরে, ডিমে, তার পরে ব্রেডক্রাম্বে। ভাল করে কোট করে টুকরগুলো একটা ট্রেতে তুলে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিলে আগে থেকেই প্রস্তত থাকবে পপকর্ন গুলো। এবার কড়াইয়ে বেশ অনেকটা তেল দিয়ে ভাল করে বেজে, গরম গরম খাওয়ার অপেক্ষা। ডিপ ফ্রিজে না রেখে, সরাসরিও ভাজা যায়, তাতেও কোনও অসুবিধা নেই। কেবল খাওয়ার সময় যোগ্য সঙ্গত চাই মেয়োনিজ় বা সসের।
আহেলীর বাড়িতে সবাই খুশি, চটপটে মজাদার এই স্ন্যাক্স পেয়ে। আহেলীরও কনফিডেন্স বেড়ে গেছে এক ধাক্কায়। পুজোর আড্ডা এক তুড়িতে জমিয়ে দেবে সে। আপনারও যে কোনও এক দিনের সন্ধের স্ন্যাক্সে রাখতেই পারেন এই চিকেন পপকর্ন। দামের দিক থেকে যেমন সাশ্রয়, স্বাস্থ্যের ক্ষতিও অনেক কম। অথচ স্বাদের সঙ্গে কোনও আপস নয়।