হাজার ঝক্কি সামলে বহুদিন পরে পুজোয় ফিরছেন ঘরের মানুষ, সাজিয়ে রাখুন ঘর
কর্মসূত্রে অনেকদিন হল মুম্বই নিবাসী অভীক। কাজের চাপে সে ভাবে বাড়ি আসাও হয় না। তবে এবার লকডাউনে মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটে আটাকা পড়ে ভীষণ ভাবে বেলঘড়িয়ার বাড়িটা মিস করেছে সে। তাই অন্যান্য বারের থেকে এ বছর পুজোয় বাড়ি যাওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে অভীক। টিকিট কনফার্ম হতেই বাড়িতে জানানোও হয়ে গিয়েছে।
ছেলে এতদিন পর আসছে শুনে সাজো সাজো রব মিত্র বাড়িতে। কোভিড সংক্রমণ নিয়ে একটু ভয়ও আছে সকলের মনে। তবে তাও ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছে এর চেয়ে ভাল খবর কী হতে পারে। তবে ছেলেকে আইসোলেশনে রাখার সব ব্যবস্থা করে ফেলেছেন রমাদেবী। কারণ অভীকের যা খুঁতখুঁতে স্বভাব, তাতে করোনা হটস্পট মুম্বই থেকে ফিরে আলাদাই থাকবে সে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত সকলে। এখন পালা অভীকের ঘর সাজানোর। এমনিতে রোজই ছেলের ঘর গুছিয়ে রাখেন রমাদেবী। তবে এবার অভীকের পছন্দ-অপছন্দের দিকে একটু বেশিই খেয়াল রাখছেন তিনি।
মিত্র বাড়ির চেহারাটা এবার পুজোর সময় বাংলার আরও অনেক বাড়িতেই দেখা যাবে। অন্য রাজ্য থেকে পুজোয় বাড়ি আসবেন অনেকের ছেলেমেয়ে। আর তাদের ঘর সাজাতেই এখন ব্যস্ত মা-বাবা, ভাই-বোনেরা।
কী কী রাখবেন
১। প্রথমেই যিনি আসছেন তাঁর পছন্দ-অপছন্দের একটা তালিকা বানিয়ে নিন। আর অপছন্দের জিনিসগুলো তাঁর ঘরের আশেপাশেও ঘেঁষতে দেবেন না।
২। ঘরে কোনও রিডিং টেবিল থাকলে সেটায় উজ্জ্বল কোনও রঙয়ের টেবিলক্লথ পেতে ফেলুন। মনে রাখবেন বাড়ির বাইরে করোনা আবহে নানা হ্যাপা পোহাতে হয়েছে এই মানুষগুলোকে। তাই পুজোর কদিন তাদের আনন্দে রাখার দায়িত্ব আপনার। আর উজ্জ্বল রঙ মনে আনন্দ দেয় সবসময়। এক্ষেত্রে যাঁর ঘর তাঁর পছন্দের রঙকে প্রাধান্য দিন।
৩। ঘরের সঙ্গে লাগোয়া বারান্দা কিংবা জানলায় গাছ রাখার সুযোগ থাকলে ফুলের গাছ রাখতে পারেন।
৪। পড়ার শখ থাকলে টেবিলে অবশ্যই সাজিয়ে রাখুন পূজাবার্ষিকী। ছোটবেলার নস্ট্যালজিয়ায় ফিরতে ভালই লাগবে আপনার সন্তানের। রাখতে পারেন ছোট্ট গাছের পট কিংবা ল্যাম্পশেড। কর্মক্ষেত্র থেকে আচমকা দরকারি ফোন আসতেই পারে। নোট নেওয়ার জন্য তাই টেবিলের উপর একটা পেন আর নোটবুক রেখে দিন মনে করে।
৫। বিছানার চাদর, বালিশ-কুশনের কভার আর পর্দা পাল্টে ফেলুন। যিনি থাকবেন চেষ্টা করুন তাঁর পছন্দের রঙকে প্রাধান্য দিতে।
৬। বাড়িতে ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে সেটা যেন পুজোর কদিন ঠিকঠাক পরিষেবা দেয় সে ব্যাপারে সম্ভব হলে আগেভাগেই সার্ভিস প্রোভাইডারের সঙ্গে কথা বলে রাখুন।
৭। বাড়ির বাইরে থাকলে বাঙালি সবচেয়ে বেশি মিস করে বাড়ির খাবার। তাই পুজোর কদিন মেনুতে রাখুন সাবেকি পদ। বিশেষ করে যা আপনার সন্তান খেতে ভালবাসে সেগুলো রেঁধে খাওয়াতে পারলে তো কেল্লাফতে।
৮। যেদিন আপনার সন্তান আসবে, সে একা হোক বা সপরিবারে আসুক, সেদিন তার ঘরের বিছানা বা টেবিলে সাজিয়ে রাখুন পুজোর উপহার। জিনিস যাই হোক, মা-বাবার থেকে পাওয়া উপহার সকলের মনেই আনন্দ দেয়।